অর্থনীতি বিভাগ সম্পর্কে

তলাবিহীন ঝুড়ি তকমা পাওয়া এই দেশের ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাংক কর্তৃক নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরের স্বীকৃতির অগ্রযাত্রায় দেশের অর্ধেক জনসংখ্যা নারীর অবদান অনস্বীকার্য ,আর এই নারীদের তৈরিতে যে সকল প্রতিষ্ঠান নিরলস শ্রম দিয়ে চলেছে তাদের অন্যতম ইডেন মহিলা কলেজ । এই কলেজের শুভযাত্রা শুরু হয়েছিল ১৮৭৬ সালে গার্লস স্কুল হিসেবে,তারপর কালের প্ররিক্রমায় , সময়ের প্রয়োজনে বর্তমানের ইডেন মহিলা কলেজ, যা আজিমপুর ও পলাশির মাঝামাঝি স্থানে সুবিশাল ও দৃষ্টিনন্দন ক্যাম্পাসে অবস্থিত। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই মেয়ে শিক্ষার্থদের গুণগত শিক্ষাপ্রদান ও জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার সক্ষমতা অর্জনে প্রয়োজনীয় দক্ষতা আয়ত্তকরণের উপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি তাদের নৈতিক ও মানবিক গুণাবলীর বিকাশ সাধন , মন ও মনন উন্নয়নে সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চায় উদ্বুদ্ধকরণ এবং শারীরিক সুস্থতার জন্য খেলাধুলায় উৎসাহিতকরণ এবং সকল ধরণের মেধার স্বীকৃতি প্রদান করে আসছে । দেশ ও দেশের বাইরে বিভিন্ন কর্মকান্ডে এই কলেজের শিক্ষার্থীদের অবদান ও সরব উপস্থিতি কলেজের সম্মানিত শিক্ষকমন্ডলী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম উজ্জল করে তুলছে।
১৯৬২ সাল থেকেই অর্থনীতি একটি স্বতন্ত্র বিভাগ হিসেবে স্নাতক কোর্স চালু করে এবং ১৯৮৯ সালে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু হলে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ বিভাগে পরিণত হয় । প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবিভুক্ত কলেজ হিসেবে পরর্বতীতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং পুনরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবিভুক্ত কলেজ হিসেবে পাঠদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে । বর্তমানে এই বিভাগে কর্মরত শিক্ষকের সংখ্যা ১৭ জন । এছাড়া বিভাগের কর্মকান্ড পরিচালনায় সহায়তার জন্য রয়েছে দুই জন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী ও একজন সেমীনার সহকারী । স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণী মিলিয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ১,৪৭১ জন । বিভাগে শ্রেণীকক্ষের সল্পতা , অপরিসর ও অভিনিবেশ সহকারে পড়াশোনার অনুপযোগী সেমিনার কক্ষ সত্তে¡ও শিক্ষকগণের নিরলস প্রচেষ্টা এবং নির্দেশনায় এ বিভাগের শিক্ষার্থীদেও ফলাফল সন্তোষজনক ।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লব (4IR) যা  Artificial Intelligence (AI) , Robotics,Internet of Things (IOT) ,3D Printing, Genetic Engineering এবং Quantum computing ইত্যাদির সমন্বিত রূপ তাকে আলিংগণের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করতে হবে। আগামী বিশ্বে ৭৫% ভাগ কাজ তৈরি হবে STEM ( Science , Technology , Engineering and Mathematics ) থেকে । বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উচ্চ শিক্ষা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ 4IR এর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম মানব সম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে শিক্ষাক্রম এবং বিভিন্ন বিষয়ের পাঠ্যসূচিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করেছে। অর্থনীতি বিষয় ও এর বাইরে নয় । দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী , কাজেই নারী শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের তত্ত¡ , তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার দক্ষ করে তুলতে ডিজিটাল শ্রেণিকক্ষ (মাল্টিমিডিয়া ) স্থাপন করা হয়েছে । এছাড়া এ বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তির সাথে আরও অধিক মেলবন্ধন কীভাবে বাড়ানো যায় সেটি নিয়ে শিক্ষকগণ কাজ করছেন । আশা করা যায় ভবিষ্যতে এ বিভাগের শিক্ষার্থীগণ অগ্রজদের ধারাবাহিকতায় নিজের , পরিবারের সমাজের তথা দেশের মুখ উজ্জল করবে।