মনোবিজ্ঞান বিভাগ সম্পর্কে

ঐতিহ্য মন্ডিত সুপ্রাচীন বিদ্যাপীঠ ইডেন মহিলা কলেজ জন্মলগ্ন থেকেই নারী শিক্ষার অগ্রযাত্রার অগ্রণী ভ‚মিকা রেখে আসছে। ১৮৭৩ সালে স্থাপিত ইডেন স্কুল ১৯২৬ সালে ইডেন কলেজ হিসাবে যাত্রা শুরু করলেও ১৯৬২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে মনোবিজ্ঞান অন্তর্ভুক্ত হয়। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১৯৮৪-১৯৮৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতক সম্মান কোর্স এবং ১৯৮৭-৮৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতকোত্তর কোর্স শুরু হয়। পরবর্তীকালে ১৯৯১- ৯২ শিক্ষাবর্ষ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক সম্মান ও স্নাতকোত্তর কোর্স পরিচালনা শুরু হয়। বর্তমানে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে অধিভূক্ত কলেজ হিসাবে ঢাকা – বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কোর্স গুলো পরিচালিত হচ্ছে। প্রথম থেকেই ইডেন মহিলা কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রীরা স্নাতক সম্মানের ফলাফলে সাফল্য অর্জন করতে থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সম্মান ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় মনোবিজ্ঞান বিষয়ের মেধা তালিকায় প্রথম সারির প্রায় সবগুলো আসন বরাবরই এই বিভাগের ছাত্রীরা অর্জন করে আসছে। ইতিপূর্বে বিভাগের কৃতি ছাত্রীরা সম্মান ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ১ম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অর্জন করার জন্য স্বর্ণপদকসহ অর্জন করেছেন অনেক পুরস্কার।

প্রতি বছর স্নাতক সম্মান পরীক্ষায় পাশকৃত কৃতি ছাত্রীরা ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পেশাদার স্নাতকোত্তর কোর্সে ভর্তির সুযোগ পেয়ে থাকে। এ বছরও ১৩ জন ছাত্রী Department of Clinical Psychology ; Department of Educational and Counseling Psychology ; Department of Industrial Psychology ; Department of School Psychology তে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। ফলশ্রæতিতে একজন পেশাদার মনোবিজ্ঞানী হিসাবে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ তৈরি হচ্ছে।এখান থেকে স্নাতকেত্তর কোর্সে কৃতিত্বের সাথে পাশকৃত ছাত্রীরা বিভিন্ন হাসপাতালে,এনজিও,স্কুল-কলেজ,শিল্প প্রতিষ্ঠান গুলোতে Counselor হিসাবে কাজের সুযোগ পাচ্ছে। মনোবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রীরা শুধু পড়াশুনাতেই শ্রেষ্ঠ নয় বরং বিভিন্ন সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমেও দক্ষ। বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক সপ্তাহ, বিজয় মেলা ,বাস্কেটবল এবং বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবসে মনোবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রীদের অংশগ্রহণ উজ্জ্বল ও স্বতঃস্ফূর্ত।

সূচনালগ্ন থেকে এ বিভাগে অনেক অভিজ্ঞ শিক্ষক বিভাগীয় প্রধান হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন,যেমন-প্রফেসর ফিরোজা খন্দকার, প্রফেসরশেফালী মাহবুব,প্রফেসর দেওয়ান ইউনুস আলী,প্রফেসর বেগম তওহীদ ফারুকী, প্রফেসর সুফিয়া জুলফিকার নাজমা, প্রফেসর নার্গিস জাহান,প্রফেসর মাহ্ফুজা বেগম,প্রফেসর আইরিন ফেরদৌস (বর্তমান)।

মনোবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যয়নরত বর্তমান ছাত্রী সংখ্যা ৬৬০ জন। ডিগ্রি (পাস কোর্স এবং মাষ্টার্স ১ম পর্বের ছাত্রী ভর্তি গত বছর থেকে বন্ধ থাকায় বর্তমানে ছাত্রী সংখ্যা কিছুটা কমে গেছে, ৪ বছরের অনার্স এবং মাস্টার্স কোর্স চালু থাকা সত্তে¡ও এ বিভাগের শিক্ষক সংখ্যা এখনও সাত (০৭) জন। বর্তমানে বিভাগে প্রভাষকের একটি পোষ্ট খালি আছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। শিক্ষকের স্বল্পতাসহ নানাবিধ সীমাবদ্ধতা থাকা সত্তে¡ও বিভাগীয় শিক্ষকগণ তাদের সর্বোচ্চ মেধা, অভিজ্ঞতা ও আন্তরিকতা দিয়ে শিক্ষর্থীদের গড়ে তোলার কাজে রত আছেন। বর্তমানে সাত (০৭) জন শিক্ষকের সমন্বয়ে মনোবিজ্ঞান বিভাগের কার্যক্রম চলছে। শিক্ষকরা হলেন, অধ্যাপক আইরিন ফেরদৌস (বিভাগীয় প্রধান), জনাব হাসিনা ইসলাম (সহযোগী অধ্যাপক), জনাব মোঃ আবুল বাসার তালুকদার (সহকারী অধ্যাপক), জনাব মোছাঃ মুর্শিদা খাতুন (সহ: অধ্যাপক), জনাব লতিফা চৌধুরী (সহ.অধ্যাপক)সংযুক্ত, জনাব মোছাঃ নাদিরা বেগম (প্রভাষক), জনাব মাসুমা খাতুন (প্রভাষক)। সহযোগী অধ্যাপক জনাব হাসিনা ইসলাম এই বিভাগ থেকে ১৭ তম বিসিএস এ সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে এই বিভাগেই কর্মরত আছে । বর্তমানে কলেজে কাউন্সেলিং সাইকোলজিষ্ট হিসেবে কর্মরত ছাত্রী সৈয়দা আমিনা ইফাদ এই বিভাগের ছাত্রী ছিল। এছাড়াও বিভাগের একজন দক্ষ সেমিনার সহকারী খায়রুন্নাহার ভ‚ঞা এবং এই বিভাগের প্রাক্তন ছাত্রী আয়মা সুলতানা ল্যাব সহকারী হিসাবে কর্মরত আছে। এছাড়া বিভাগে রয়েছে দু’জন পরিশ্রমী ও সকল ছাত্রীদের প্রিয় এম.এল.এস সুফিয়া বেগম ও শফিকুল ইসলাম।

অতিক্ষুদ্র পরিসর হতে বর্তমান ছাত্রী সংখ্যা বহুগুণে বৃদ্ধি পেলেও শিক্ষক স্বল্পতা আরো কিছু অপ্রতুলতা রয়েছে এ বিভাগে। তথাপি বিভাগীয় শিক্ষকেরা উন্নত প্রযুক্তির ২টি মাল্টিমিডিয়া এবং ১টি স্মার্টবোর্ড দ্বারা মানসম্মত পাঠদান করছেন। বিভাগে একটি সমৃদ্ধ সেমিনার আছে যা দেশী বিদেশী বই দ্বারা পূর্ণ, আছে নানা যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ একটি পরীক্ষাগার। পাঠদানের জন্য রয়েছে তিনটি শ্রেণিকক্ষ।
বিভাগীয় কর্মকান্ডে কলেজের মাননীয় অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ মহোদয় এবং অন্যান্য বিভাগের শিক্ষকবৃন্দের সক্রিয় সহযোগিতা আমরা পেয়েছি। এজন্য তাঁদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। এই বিভাগের ছাত্রীরা জ্ঞানের আলোকে আলোকিত হয়ে মানবিক গুণাবলীতে সমৃদ্ধ হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে নিয়োজিত থাকবে এই প্রত্যাশা রইল।

“স্বপ্ন নিয়ে পড়ে থেকো না,
সঠিক পরিকল্পনা আর
অক্লান্ত পরিশ্রম,
তোমার স্বপ্নের বাস্তবতা দেখাবে।”

মনোবিজ্ঞান বিভাগ
অধ্যাপক আইরিন ফেরদৌস
বিভাগীয় প্রধান